বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গেল-এর রহস্য সমাধান করে ফেললেন বিজ্ঞানীরা?

অবশেষে কি সমাধান হল বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গেলের রহস্যের? বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গেল নিয়ে তৈরি নানা মিথের সদুত্তর কি এ বার পাওয়া যাবে? এই সব প্রশ্নের নয়া সমাধান দিচ্ছেন এক দল বিজ্ঞানী। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম অংশের ত্রিকোণাকৃতি জায়াগায় বিভিন্ন সময় উধাও হয়ে গিয়েছে জাহাজ থেকে বিমান। ‘ডেভিলস ট্র্যাঙ্গল’ নিয়ে নিরন্তর গবেষণা করেও ‘কেন’র উত্তর পাওয়া যায়নি। যদিও এই রহস্য নিয়ে চলেছে বিস্তর আলোচনা। নানা ব্যাখ্যা। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি। সেই রকমই আরও একটি নতুন ব্যাখ্যা সংযোজন করলেন বিখ্যাত আবহবিদ র‌্যান্ডি কারভ্যানি-সহ বেশ কিছু বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গেলের রহস্যের পিছনে রয়েছে এক রকম ষড়ভুজাকৃতি মেঘ (হেক্সাগোনাল ক্লাউড)।  উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা দ্বীপে ২০ থেকে ৫৫ মাইল জুড়ে ষড়ভুজাকৃতি মেঘ তৈরি করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ু। যার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ মাইল। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ুকে বলা হয় ‘এয়ার বম্ব’। এই বায়ু প্রায় ৪৫ ফুট উচ্চতার ঝড় তৈরি করতে পারে। যার ফলে বারমুডা  ট্রায়্যাঙ্গেল দিয়ে যাওয়া জাহাজ বা প্লেন উধাও হয়ে যায়। কিন্তু উধাও হয়ে কোথায় তার শেষ ঠিকানা হয় সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট নন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও জাহাজ বা বিমান এই এলাকা দিয়ে যায় না।  এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বার্মুডা ট্রায়্যাঙ্গেল সম্পর্কে কিছু অবাক করা তথ্য।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চলকে বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গেল (Bermuda Triangle) বলে। এই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত যত রহস্যময় দুর্ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কোন হিসাব নেই । পৃথিবীর রহস্যময় অঞ্চলের তকমা জুটেছে এই অঞ্চলটির। স্থানীয় অধিবাসীরা এই অঞ্চলটিকে ডেভিলস ট্রায়্যাঙ্গেল (Devil’s Triangle) বা শয়তানের ত্রিভুজ বলে থাকেন।
আদতে ক্যারিবিয়ন সাগরের এই ত্রিভুজ এলাকাই হল বারমুডা ট্রায়ঙ্গাল। এলাকাটি আটলান্তিক মহাসাগরের তিন প্রান্ত দিয়ে সীমাবদ্ধ। বারমুডা ট্রায়ঙ্গালের তিনটি প্রান্তের একটি প্রান্ত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা আরেক প্রান্ত পুয়ের্তো রিকো। এবং অন্য প্রান্তটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বারমুডা দ্বীপের সঙ্গে যুক্ত। মোট আয়তন একশ চোদ্দ লাখ বর্গ কিলোমিটার অর্থাত্‍ চুয়াল্লিশ লাখ বর্গ মাইল।
এই বিশাল অঞ্চলে কত জাহাজ, বিমান নিরুদ্দেশ হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। কোনও জাহাজ এই অঞ্চলের গভীরে প্রবেশ করলেই বেতার তরঙ্গ আর পাঠাতে পারে না। ফলে উপকূলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকেনা। এবং এক সময়ে দিক নির্ণয় করতে না পেরে রহস্য জনক ভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। তাই এই অঞ্চলটিকে রেডিও ডেড স্পটও বলে।
খোদ কলম্বাস চোদ্দশ বিরানব্বই সালের এগারোই অক্টোবর তাঁর লগবুকে এই ট্রায়ঙ্গাল নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা লেখেন। বারমুডা ট্রায়াঙ্গালের রহস্যভেদ করার জন্য অনেকগুলি তত্ত্ব দাড় করানো হয়েছিল। অনেকের মতে এখানে চুম্বকীয় তত্ত্ব কাজ করে। তাদের মতে আকাশ ও সমুদ্রের মধ্যে এখানে তড়িতাহত ক্রিয়া বিক্রিয়া ঘটে। যার ফলেই দুর্ঘটনা।
কেউ বলেন এই ট্রায়াঙ্গাল এলাকায় ভূমিকম্পের জন্য পাহাড়সম বিশালি ঢেউ তৈরি হয়। তাতেই দুর্ঘটনা। আবার অনেকের মতে ট্রায়াঙ্গাল অঞ্চলে সমুদ্র ভূপিষ্টে রয়েছে এক অনন্ত ফাটল। সেখানে হারিয়ে যায় জাহাজ। তবে এই সব তত্বকে উড়িয়ে বিজ্ঞানীরা এক নতুন তত্ত্ব দিয়েছেন। এবং দাবি করছেন অবশেষে বারমুডা ট্রায়াঙ্গালের রহস্যে সমাধান হয়েছে (Bermuda triangle mystery solved), তাদের দাবি।
বারমুডা রহস্যের পেছনে রয়েছে ষড়ভূজাকৃতি মেঘ। আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা দ্বীপের কাছে প্রায় পঞ্চাশ মাইল এলাকা জুড়ে রয়েছে এই মেঘ। যার গতি ঘণ্টায় একশ সত্তর মাইল। এবং এই মেঘের ঝড়েই যাবতীয় দুর্ঘটনা।

0 comments:

Post a Comment

টিপস

কপিরাইট-২০১৭ © মুহাম্মদ আলম
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।
মোবাইল নং:- ০১৮১৩-......