![]() |
দেব |
তিনি এখন টলিউডের অন্যতম স্তম্ভ। তিনি তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত সাংসদও।
আগেও তাঁকে ঘিরে বিতর্কের আগুন জ্বলে উঠেছে দাউ দাউ করে। ভোটে দাঁড়িয়ে কেমন লাগছে? প্রবল বিতর্কিত উত্তর দিয়েছিলেন
তিনি। তাঁকে কী ভাবে ‘চাপে ফেলে’ ভোটে
দাঁড় করিয়েছিলেন ‘দিদি’, রাজ্যের এক
মন্ত্রী একটি স্টিং ভিডিওয় সে গল্প শোনানোর পর আবার এক বার বিতর্ক হয়েছিল। নোট
বাতিল নিয়ে মুখ খুলে তৃতীয় বার বড়সড় বিতর্কের কেন্দ্রে তিনি। কারণ নোট সঙ্কট
ইস্যুতে তাঁর অবস্থান দলনেত্রীর অবস্থানের অনেকটা বিপরীতে।
তিনি দেব। টলিউডপ্রেমীদের অনেকেরই হার্টথ্রব। ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ।
নোট বাতিল প্রসঙ্গে তিনি কী বলেছেন? দেব বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেন। ৫০০
টাকা হাজার টাকার নোট বাতিলকে কেন্দ্র করে দেশে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে,
তাতে টলিউড কি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে? দেব মনে
করছেন, টলিউডের সত্যিই ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু নোট বাতিলের
সিদ্ধান্তকে যে তিনি সমর্থন করছেন, তা স্বীকার করতে ঘাটালের
তৃণমূল সাংসদের কোনও দ্বিধা নেই। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি
পাঁচশো আর হাজার টাকা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দারুণ। যাদের কালো টাকা আছে, তাদের প্রতি আমার কোনও সহানুভূতি নেই। কিন্তু এ সবের মাঝখানে ইন্ডাস্ট্রির
(টলিউড) খুব ক্ষতি হয়ে গেল।’’
দেব মনে করছেন আরও দু’ সপ্তাহ পরেই বোঝা যাবে কতটা ক্ষতি হল ইন্ডাস্ট্রির। তাঁর কথায় ‘‘সিচুয়েশন এখনও ফিফটি-ফিফটি। আর দু’ সপ্তাহ
পরে আসল চেহারাটা বুঝতে পারব। প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করি। কিন্তু যদি ‘ইমপ্লিমেন্টেশন’টা আরেকটু বেটার করতেন, তা হলে সাধারণ মানুষের এতটা
হয়রানি হতো না। টাকাই নেই বাজারে। লোকে কেন সিনেমা যাবে বলুন ? আমি একটা রেস্তোরাঁ চালাই। সেখানে শুধু কুড়ি শতাংশ লোক আসছে আগের থেকে।
হলগুলো ফাঁকা।
আরেকটু বেটার প্ল্যান করলে
ভাল হত।’’
তৃণমূল সাংসদ দেবের এই অবস্থান কিন্তু দলনেত্রীর অবস্থানের ধারেকাছেও আসে
না। নোট বাতিল ইস্যুতে প্রায় সব বিরোধী দলই সরকারের বিরুদ্ধে সরব। কিন্তু তাঁদের
মধ্যেও সবচেয়ে বেশি মুখর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। মোদীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে
দিতে দিল্লি চলে গিয়েছেন মমতা। কখনও তিনি মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবন যাচ্ছেন। কখনও
তাঁর নির্দেশে তৃণমূল সাংসদরা সংসদের ভিতরে-বাইরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কখনও
অরবিন্দ কেজরীবালের সভামঞ্চ থেকে থেকে মোদী সরকারকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন
তিনি। অন্য কোনও বিরোধী দল নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি তোলেননি।
কিন্তু মমতা আর কেজরীবালের হুঁশিয়ারি,
‘‘তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।’’ সেই তৃণমূলের সাংসদ হয়ে দেব এ কী বললেন! নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘দারুণ’ বলে আখ্যা দিলেন! ‘প্রধানমন্ত্রীকে
সমর্থন করি’ বললেন!
দলের মধ্যেই প্রবল গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে দেবের মন্তব্যে। দলনেত্রীর অবস্থান
জানা সত্ত্বেও ঘাটালের সাংসদ এই মন্তব্য কী করে করলেন, সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন
অন্য কয়েক জন সাংসদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি। তিনি
দিল্লিতে থাকলেও, তৃণমূল সূত্রের খবর, মমতা
দেবের এই মন্তব্যের কথা জানতে পেরেছেন। তবে তাতে মমতার প্রতিক্রিয়া কী, তা স্পষ্ট নয়। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে দেবের মন্তব্য
প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু
শুনিনি, আমি কিছু বলতে পারব না।’’ দলের
জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনও জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি
বলেছেন,
‘‘এই বিষয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। আগে সংশ্লিষ্ট সাংসদের সঙ্গে কথা বলব।
বিষয়টি জেনে যা বলার বলব।’’
সোর্স: ইন্ডিয়ান টাইমস
0 comments:
Post a Comment